বিপরীতমুখী জাতীয় স্বার্থ আর শাসকের স্বার্থ
জাতীয় স্বার্থ আর শাসকের স্বার্থ কিভাবে বিপরীতমুখী হয়ে উঠতে পারে, তার আর একটা নমুনা আওয়ামী লীগ দেখালো বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমার পরও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করে।
এই বাড়তি টাকাটা তাদের দরকার, কেননা জনগণের কাছ থেকে নিংড়ে নেয়া এই অর্থের বড় অংশই শেষমেষ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে শাসকদের আত্মীয়-স্বজন হোমড়াচোমড়ারা নিয়ে নেয়, 'খেলাপি ঋণ' ফেরত না পাওয়া এই ঋণের পরিমান ৪৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। অথর্নীতিবিদ মইনুল ইসলাম হিসেব কষে দেখেছিয়েন, অবলোপন করা, মানে মাফ করে দেয়া ঋণ গুনলে এই খেলাপি ঋণের পরিমান ২লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে!
লুটপাটের এ্ই প্রবাহ অব্যাহত রাখার জন্যই জ্বালানির মতো পণ্যের ওপর বাড়তি দাম ধরে রাখা হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে দেশের উৎপাদনী খাতের কি দশা দাঁড়াচ্ছে?
বাংলাদেশের শিল্প-কলকারখানা কিভাবে ভারত বা চিনের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকবে কয়েক গুন বেশি দামে বিদ্যুত কিনে? মানুষের জীবন যাত্রায় যে বিপুল প্রভাব পড়বে, তা কি শেষ পর্যন্ত উৎপাদনী খরচই বাড়াবে না? কালকের প্রথম আলোতে সংবাদ এসেছে গুজরাটে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। আজকে আমরা দেখছি বিদ্যুৎদের এই মূল্যবৃদ্ধি।
শাসকদের এই স্বলমেয়াদী লুণ্ঠনের নেশা সমাজের, উৎপাদনশীলতার যে দীর্ঘস্থায়ী সর্বনাশ ডেকে আনে, তারই পরিনামে গত কয়েক বছর ধরে কার্যত দেশে কোন নতুন উৎপাদনী বিনিয়োগ নেই। সর্বত্র স্থবিরতার রাজত্ব চলছে। এরই একটা প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে বিদেশ যাবার জন্য মরিয়া যুব সমাজের মাঝে, আরেকটা দেখা যাবে জমি বিক্রি করে অবিশ্বাস্য পরিমান ঘুষ দিয়ে হলেও কোন একটা চাকরি খোঁজার প্রবণতা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেড়েছে।। এমপিওভুক্ত গ্রামের বিদ্যালয়ের চাকরির জন্য ঘুষের পরিমান এখন ৫ লাখ, পুলিশের সেপাই হবার জন্য লেগেছে লাখ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে








