মুরাদ–তাইজুলের ঘূর্ণিতে ৪৭ রানে দাপুটে জয় বাংলাদেশের
ছবি: সংগৃহীত
সিরিজের প্রথম টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চারদিন না যেতেই ঘূর্ণি-গতির যৌথ আক্রমণে আইরিশ ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেয় টাইগাররা।
দুই বছর আগের মিরপুরে প্রথম টেস্ট সাক্ষাতে ৭ উইকেটে জেতার পর এটি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয়—এবার আরও প্রভাবশালী ব্যবধানে।
ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে স্পিন ও পেস—উভয় বিভাগের ধারালো বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডকে ২৮৬ রানে থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে টাইগাররা।
মাহমুদুল হাসান জয়ের ক্যারিয়ার–সেরা ১৭১ রানের ইনিংস, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি (১০০), সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক ও লিটন দাসের হাফসেঞ্চুরিতে ৫৮৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড়ায়। তৃতীয় দিনের শেষে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেন শান্ত। এতে লিড দাঁড়ায় ৩০১ রান।
বাংলাদেশের ইনিংসে ম্যাথু হাম্প্রেস নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার। ব্যারি ম্যাকার্থির ঝুলিতে যায় ২ উইকেট, একটি নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
৩০১ রানের ঘাটতি পুষিয়ে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলেই আয়ারল্যান্ড ৫ উইকেটে ৮৬ রানে চাপে পড়ে।
নাহিদ রানার বোল্ডে ফেরেন চাদ কারমাইকেল (৫)। ভালো খেলতে থাকা পল স্টার্লিং ৪৩ রান করে রানআউট হন শান্তর সরাসরি থ্রোতে। তাইজুল ইসলামের এলবিডব্লিউতে ফেরেন হ্যারি টেক্টর (১৮)।
এরপর দুর্দান্ত ক্যাচে সাদমান ইসলামের হাতে ধরা পড়েন কুর্তিস ক্যাম্ফার (৫)—হাসান মুরাদের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে বাজপাখির মতো লাফিয়ে অধিনায়কীয় তৎপরতায় বল তালুবন্দি করেন সাদমান।
আরও পড়ুন: অনুষ্ঠানে অব্যবস্থাপনা, ক্ষমা চাইলেন বিসিবি সভাপতি বুলবুল
মুরাদের বলে রিভিউতে আউট হন লরকান টাকার (৯)। ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা।
চতুর্থ দিনের শুরু থেকেই আছড়ে পড়ে বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়। সকালে তাইজুল আঘাত হানেন। লাঞ্চের পর নাহিদ রানার বাউন্সারে বিভ্রান্ত হয়ে ৫২ রানে ক্যাচ দেন আগেরদিনের সেরা ব্যাটার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন—যিনি মিরাজের টানা দুই বলে এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত সংশোধনে।
ম্যাকব্রাইন ফিরতেই ব্যারি ম্যাকার্থির সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন জর্ডান নিল। আট নম্বরে নেমে নিলের ৭ চারে ৩৬ রানের লড়াই কিছুক্ষণ আশা জাগালেও সেখানেই শেষ প্রতিরোধ। নিল আউট হলে ভেঙে পড়ে জুটি; পরের ওভারেই ফিরে যান ম্যাকার্থি (২৫)।
এরপর বাউন্ডারিতে সাদমানের দুর্দান্ত ক্যাচে কাটা পড়েন জর্ডান নেইল (৩৮)। হাসান মুরাদের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাঁচতে পারেননি। দলীয় ২৫২ রানে নবম উইকেট পড়ে। শেষ পর্যন্ত ২৫৪ রানে অল আউট হয় আয়ারল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪ উইকেট নেন অভিষিক্ত হাসান মুরাদ (৪/৬০)। তাইজুল ইসলাম নেন ৩ উইকেট (৩/৮৪) এবং গতিতারকা নাহিদ রানা তুলে নেন ২ উইকেট।
মোট ৩০১ রানের লিড আর দ্বিতীয় ইনিংসে আইরিশদের ২৫৪ রানে থেমে যাওয়া—ইনিংস ও ৪৭ রানের বড় জয়ে শেষ হয় সিলেট টেস্ট।
আয়ারল্যান্ড: ২৮৬ ও ২৫৪
(ম্যাকব্রাইন ৫২, স্টার্লিং ৪৩, বলবার্নি ৩৮, নেইল ৩৮; মুরাদ ৪/৬০, তাইজুল ৩/৮৪, রানা ২ উইকেট)
বাংলাদেশ: ৫৮৭/৮ ডিক্লেয়ার
(জয় ১৭১, শান্ত ১০০, সাদমান ৮০, মুমিনুল ৮২, লিটন ৬০; হাম্প্রেস ৫ উইকেট)
ফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও ৪৭ রানে জয়ী।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








