News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ২০ জুলাই ২০২৫

‘জুলাই সনদ’ নিয়ে গড়িমসি চলবে না: সালাহউদ্দিন

‘জুলাই সনদ’ নিয়ে গড়িমসি চলবে না: সালাহউদ্দিন

ছবি: সংগৃহীত

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান’-এর শহীদদের স্মরণে আয়োজিত মৌন মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ‘জুলাই সনদ’ দ্রুত প্রকাশের দাবিতে সরকার, সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনকে একযোগে দায়ী করেছেন বিএনপি নেতারা।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয় জাতীয়তাবাদী দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী। 

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল হক মজনুর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই মাসের মধ্যেই যদি 'জুলাই সনদ' প্রকাশ না হয়, তবে এর দায় নিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকার, সংস্কার কমিশন এবং ঐকমত্য কমিশনকে। সরকার একদিকে দ্বৈত ভূমিকা পালন করছে, অন্যদিকে ঐকমত্য কমিশনের ব্যর্থতা জনগণের ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যে সংগ্রাম চলছে, তা কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াই নয়; এটি আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার শতাব্দীর একবার আসা সুযোগ। স্বাধীনতা অর্জনে লেগেছিল ২৩ বছর, স্বৈরাচার পতনে সময় লেগেছিল ৯ বছর—তবে এইবার, সময় সীমিত এবং ঐক্য জরুরি।

সালাহউদ্দিন আরও দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন প্রস্তাব—যেমন স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও অনুপাতভিত্তিক ভোট (PR সিস্টেম)—আসলে গণতন্ত্র নয়, বরং বিভ্রান্তি ছড়ানোর পরিকল্পিত কৌশল।

আরও পড়ুন: সালাহউদ্দিনকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্য, এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন, অথচ তারাই এখন এক দলকে কোলে নিয়ে অন্য দলকে কাঁধে বসাচ্ছেন। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রোগ্রাম যদি করেন, তবে জনগণ সেই অপচেষ্টা প্রতিহত করবে।

তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের রূপরেখা দিন, নয়তো আমরা বিশ্বাস করব—দেশকে অশান্ত করার পরিকল্পনাকারী আপনারাই।

মির্জা আব্বাস সমাবেশে বক্তব্যে শহীদদের সম্মান রক্ষার দাবি তুলে বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদরা কোনো একক দলের নয়, তারা জাতির ছিল। অথচ আজ তাদের রক্ত নিয়ে ব্যবসা চলছে— রাজনৈতিকভাবে কেউ কেউ শহীদদের ব্যবহার করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। এটা শহীদদের অপমান, জাতির সঙ্গে প্রতারণা।

তিনি আরও বলেন, আমরা জেল খেটেছি, লড়েছি—তবে বিনিময়ে কিছু চাইনি। অথচ আজকে একটি বিশেষ দল শহীদের রক্তকে পুঁজি করে নতুন করে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসতে চাচ্ছে। কিছু তথাকথিত ধর্মীয় নেতাও আজ দ্বৈত অবস্থানে—যে জামায়াতকে একসময় পঁচা বলেছিল, আজ তার কোলে বসে আছেন।

বিকাল ৫টায় শুরু হওয়া মৌন মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, মৌচাক হয়ে আবুল হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতাকর্মীরা। তারা হাতে শহীদদের ছবি ও ব্যানার বহন করেন, যেখানে লেখা ছিল—“রক্তের উত্তর রক্ত নয়, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা চাই।

সালাহউদ্দিন আহমদ ও মির্জা আব্বাস উভয়েই জোর দিয়ে বলেন, এখন কোনো রাজনৈতিক বিভক্তি নয়, দরকার জাতীয় ঐক্য। 

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে একাধিক অপচেষ্টা চলছে, কিন্তু জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তা ব্যর্থ করব।

এই সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, মহানগর নেতা ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল দক্ষিণের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ কয়েকশ নেতাকর্মী।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়