আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত বিমান: বেঁচে ফিরলেন একজন
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে ঘটে যাওয়া একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৪২ আরোহীর মধ্যে অলৌকিকভাবে একজন যাত্রী জীবিত উদ্ধার হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আহমেদাবাদ পুলিশ কমিশনার জি.এস. মালিক।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, যা আহমেদাবাদ থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিট পর, দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে, বিমানটি শহরের বি.জে. মেডিকেল কলেজের একটি আবাসিক হোস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে।
প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, বিমানটি উড্ডয়নের পর প্রায় ৮২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেই আচমকা নিচে নামতে শুরু করে। পাইলট জরুরি সংকেত ‘মেডে’ পাঠানোর কিছু সময় পরই রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তি হলেন ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ-ভারতীয় নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ। তিনি ১১এ নম্বর আসনে ছিলেন এবং উড্ডয়নের সময় তার পাশে ছিলেন তার ভাই, যিনি এখনো নিখোঁজ।
বিশ্বাস কুমারের পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট ও গাঢ় রঙের ট্রাউজার। তার পোশাকে রক্ত ও পোড়ার দাগ স্পষ্ট দেখা গেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ধোঁয়ায় মাখামাখি অবস্থায় ধীরে ধীরে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন।
তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মুখ, কপাল ও পায়ে আঘাত রয়েছে, তবে অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
বিমানটিতে ২৩২ জন যাত্রী ও ১০ জন ক্রু ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডীয় নাগরিক ছিলেন। এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে ছিল ১১ শিশু ও ২ নবজাতক।
রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত উদ্ধার করা মৃতদেহের সংখ্যা শতাধিক, যার অধিকাংশই আগুনে পুড়ে গেছে। মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪২ আরোহী নিয়ে আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা
বিমানটি বিধ্বস্ত হয় শহরের ব্যস্ত একটি আবাসিক এলাকায়, যেখানে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আবাসিক হোস্টেল ছিল। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং কিছু স্থানীয় বাসিন্দার হতাহতের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করেছে। বিমানটির লেজ দেখা গেছে হোস্টেলের ছাদে আটকে আছে এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভবনের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
বিমানের আচমকা পতনের কারণ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা ইঞ্জিনজনিত ত্রুটি, যান্ত্রিক সমস্যা অথবা পাখির ধাক্কাকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট Flightradar24 নিশ্চিত করেছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, যা বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও নিরাপদ যাত্রীবাহী বিমান হিসেবে পরিচিত।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








