পর্নো সাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো ভারত
ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত পর্নো সাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ভারত। এর আগে সরকার ৮৫০টিরও বেশি সাইট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছিলো।
দেশটির টেলিকম মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাইটগুলো ব্লক না করতে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। বিবিসি।
পর্নো সাইট বন্ধের বিরুদ্ধে ভারতে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন শিল্পী, লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ অনেকেই। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে তারা ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ জানান।
অবশেষে মন্ত্রণালয় বলেছে, পর্নো সাইটগুলো ভারতে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। প্রাপ্তবয়স্করা প্রক্সি সেটিং ব্যবহার করে এসব সাইট ভিজিট করতে পারবেন।
শুক্রবারই এই সরকারি চিঠি আইএসপিগুলোর হাতে পৌঁছে, কিন্তু এই নির্দেশ মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি সরকারের মন্ত্রী-আমলারাও কেউ প্রকাশ্যে এই নির্দেশ নিয়ে মুখ খোলেননি।
তবে টেলিকম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে সোমবার ৮৫৭টি সাইটে অবাধ অ্যাক্সেস যাতে কন্ট্রোল করা হয়, সেই মর্মে আইএসপিগুলোকে ‘অ্যাডভাইস’ বা উপদেশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে বলিউডের চিত্রনির্মাতা রামগোপাল ভার্মা সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন, ‘ইচ্ছুক প্রাপ্তবয়স্কদের নির্দোষ আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা আর তালেবান বা আইএস যেভাবে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে তার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।’
মুখ খুলেছেন মুম্বাইতে কংগ্রেসের নেতা মিলিন্দ দেওরা। তিনি টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘পর্নো ভালবাসি কি না সেটা এখানে প্রশ্ন নয়। সরকার এখানে ব্যক্তিস্বাধীনতা ছিনতাই করছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। এরপর কি তাহলে ফোন আর টিভি নিষিদ্ধ করার পালা?’
ভারতে পর্নো সাইট বন্ধের জন্য একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসেই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেন, পর্নো সাইট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে সংবিধানের ২১ ধারা লঙ্ঘিত হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক কেউ ঘরে বসে পর্নো দেখলে, তা বন্ধ করা যাবে না। এটা ব্যক্তি স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন্ন করবে। এ রকম কাউকে ঘরের ভেতরে কোনো কিছু না দেখতে দেয়াটা আইনের পক্ষে সম্ভব নয়।’
উল্লেখ্য, অ্যাডাল্ট সাইট পর্নোহাব যে বিশ্বব্যাপী ডাটা বা তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে পৃথিবীতে ইন্টারনেটে পর্নো ট্রাফিকের উৎস বা সোর্স হিসেবে ভারতের নাম চার নম্বরে। এর আগে রয়েছে- আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও ক্যানাডার নাম।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম








