এবার চার পরিবার দাবি করছে ‘মুন্নী আমাদের’!
না, সালমান খানের সিনেমা বজরঙ্গির কাল্পনিক মুন্নি না, এ হচ্ছে সত্যিকারের রক্তমাংসের মুন্নি অর্থাৎ গীতা। ভারতের নাগরিক এই মেয়েটি গত ১৩ বছর ধরে আছে পাকিস্তানে। সম্প্রতি তাকে নিয়ে মিডিয়ায় খবর প্রকাশের সূত্রে ব্যাপক হৈ চৈয়ের পর এখন তাকে নিজেদের স্বজন দাবিদার চারটি পরবারের খোঁজ পাওয়া গেছে ভারতে।
শনিবার সকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের টুইট থেকে জানা গেছে, উত্তর প্রদেশ (ইউপি), পাঞ্জাব, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের চারটি পরিবার বর্তমানে ২১ বছর (কারো মতে ২৩) বয়সী গীতাকে নিজেদের সন্তান বলে দাবি করেছে। মেয়েটির সত্যিকারের পরিবার চিহ্নিত করতে সুষমা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের ওই পরিবারগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন এরই মধ্যে।
এর আগের অপর এক টুইটে সুষমা জানান, পাকিস্তানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে গীতা জানিয়েছিলেন যে ভারতে তার সাতজন ভাই ও তিনজন বোন রয়েছে। লিখিত আকারে গীতা আরও জানান, শিশুকালে নিজদেশ ভারতে থাকাকালে পিতার সঙ্গে তিনি বৈষ্ণ দেবীর মন্দিরে গিয়েছিলেন।
সুষমা আরও জানান, গীতাকে দেশে আনতে জরুরি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মুক্তিপাওয়া বলিউড সুপারস্টার সালমানের ব্লকবাস্টার ছবি বজরঙ্গি ভাইজানের সূত্রেই গীতার প্রসঙ্গটি আলোয় আসে। ওই সিনেমাতে দেখা যায়, ‘শত্রুদেশ’ ভারতে ঢুকে হারিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি বোবা শিশু মুন্নীকে ফের তার দেশে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে ভারতীয় নাগরিক সালমান ওরফে বজরঙ্গি জীবনের ঝুঁকি পর্যন্ত নেয় বার কয়েক। হিন্দু যুবক বজরঙ্গি আর মুসলমান শিশু মুন্নির গল্প নিয়ে এ চলচ্চিত্র দুইদেশের দর্শকমহলেই ব্যাপক আদৃত হয়। বাস্তবে এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ হবার পরপরই গীতার পরিবারকে খুঁজে বের করতে আবারো অনুপ্রাণিত হয়েছে দুই দেশের সরকারই।
অপরদিকে, বাস্তবের মুন্নী তথা গীতা শুধু মূকই না, বধিরও। কথা বলতে না পারা আর কানে শুনতে না পাওয়া গীতার বিষয়টি আগে থেকেই চর্চিত হচ্ছিল। তার পরিবারকে খোঁজাও হচ্ছিল। শেষমেষ বজরঙ্গি ভাইজান সিনেমা মুক্তির পর পাকিস্তানে হারিয়ে যাওয়া ভারতীয় শিশু গীতাকে তার নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জোরদার হতে থাকে। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টিতে নজর দেন। ওদিকে, পাকিস্তানের আলোচিত সমাজকর্মী ও সাবেক মন্ত্রী আনসার বার্নি তার ফেসবুক পেজ ও টুইট বার্তায় মুন্নীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় প্রচারণা চালাতে থাকেন। এ সূত্রে সালমান খানের টুইটের জবাবে পেশায় আইনজীবী বার্নি জানান, গীতাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে তিনি সহায়তা করবেন।
পরে ভারতীয় দূতাবাস পাকিস্তানের করাচিতে গীতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিশ্চিত হয় যে সে তাদেরই নাগরিক।
এদিকে, সুষমা পাকিস্তানে গীতাকে সহায়তাকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে অনেক সন্ধান করেও ভারতে গীতার পরিবারের খোঁজ মেলেনি।
১৩ বছর (কারো মতে ১৫ বছর) আগে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া আট বছরের শিশু গীতাকে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স বাহিনী উদ্ধার করে। পরে রেঞ্জার্স সেদেশের সমাজ কল্যাণ সংস্থা এদ্হি ফাউন্ডেশনের জিম্মায় দেয় তাকে। সেখানে সে সমাজকর্মী বিলকিস এদ্হি-র দেখাশুনায় মানুষ হতে থাকে। বিলকিস এদ্হিকে ‘মাদার অব পাকিস্তান’ নামে ডাকা হয়। তিনিই মেয়েটির নাম দেন গীতা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম








