মিরপুরে পার্কিং করা বাসে দুর্বৃত্তদের আগুন

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর সিরামিক রোডে একটি পরিত্যক্ত যাত্রীবাহী বাসে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাত আনুমানিক ৭টা ৪২ মিনিটে সিরামিক এলাকার গ্যারেজে পার্কিং করা ‘বিকল্প পরিবহন’ কোম্পানির একটি পুরনো বাসে আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, আগুন লাগার খবর পেয়ে রাত ৮টা ১৯ মিনিটে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পরপরই পল্লবী থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাসটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গ্যারেজে রাখা ছিল। এতে যাত্রী বা চালক কেউই ছিল না, ফলে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সম্পূর্ণ বাসটি পুড়ে গেছে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল আলম জানান, বাসটিতে আগুন লাগার ঘটনাটি নেহায়েত দুর্ঘটনা নয়, বরং এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তৎপরতা থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল
এদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার আশঙ্কাই প্রবল। উদ্দেশ্য ছিল আতঙ্ক সৃষ্টি করা কিংবা রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছানো।
এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়—শ্যামলীসহ আরও কয়েকটি জায়গায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে যে, ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মিরপুরের ঘটনাটিই একমাত্র নিশ্চিত বাসে আগুন লাগার তথ্য।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা চলছে। বাসে আগুনের ঘটনায় এ ধরনের অপচেষ্টা জড়িত থাকতে পারে।
পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বাসটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১২-০৫৫৭ এর মালিকানাসংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারা জড়িত এবং এর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী—তা খুঁজে বের করতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নেমেছে। এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি, তবে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি