বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল ঘড়ি রাজশাহীতে!
রাজশাহী: রাজশাহী নগরীর কাপাশিয়া গ্রামের সরদার পাড়ায় কয়েকজন যুবক একত্র হয়ে নির্মাণ করেছেন ৭৮৫ বর্গফুটের বিশাল এক ডিজিটাল ঘড়ি। নির্মাতাদের দাবি, এই ডিজিটাল ঘড়িই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘড়ি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় এ ঘড়িটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ ঘড়িটি দ্বারা রাতের বেলা সময় দেখা যাবে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূর থেকে। এ ঘড়ির নির্মাতা সরদার পাড়া গ্রামের মনতাজ সরদারের ছেলে আকুল হোসেন মিঠু (৩০)।
নির্মাতা আকুল হোসেন মিঠুর দেওয়া তথ্য মতে, এই ঘড়িটির উচ্চতা ১৭.৫ ফুট আর প্রস্থ ৪৪.৯ ফুট। প্রায় দুবছরের চেষ্টায় এ ঘড়িটি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে তারা। এ ঘড়িটি বিদ্যুৎ সহযোগে সফটওয়ার দিয়ে চালিত। এ বিশাল ঘড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৮ টি রড বাল্ব, স্টিলের বডি এবং বাঁশের তৈরি ফ্রেম। ঘড়িটি তৈরির পেছনে মোট আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
ঘড়ি নির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তা আকুল হোসেন মিঠু নিউজবাংলাদেশকে জানান, স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমি ঘড়িটি নির্মাণ করেছি। দেশ রত্ন শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আমরা যদি দেশকে ডিজিটাল না করি। তবে দেশ কীভাবে ডিজিটাল হবে।
নিউজবাংলাদেশকে মিঠু আরও জানান, তার বাবা মনতাজ সরদার কাটাখালি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। বাবার স্বপ্ন ছিল, ছেলে বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু সে তা হতে পারেনি। রাজশাহী কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স পড়েই থেমে যেতে হয়েছে তাকে। তবে তিনি হালও ছাড়েননি। অনেক আগে থেকেই ইলেক্ট্রনিক্সের কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন মিঠু। সেই সঙ্গে বছর তিনেক আগে রাজশাহী থ্রি ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডে ১৫ দিনের মাইক্রো কন্ট্রোলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
এছাড়া বিভিন্ন বইপত্র ঘেঁটে এবং ইন্টারনেট থেকে সাহায্য নিয়ে বছর দুয়েক আগে হাত দেন ডিজিটাল ঘড়ি নির্মাণ কাজে। এলাকার আরও কজন যুবক ও স্থানীয়দের নিয়ে শুরু করেন নির্মাণ কাজ। সেই থেকে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ঘড়িটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই ঘড়িটি রাতে ১০ কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা যাবে। আর দিনের বেলা কাছে থেকে দেখা যাবে। কারণ সূর্যের আলো রড বাল্বের আলোকে গ্রাস করছে বলে এটি দূর থেকে দেখা যাচ্ছে না। তবে ঘড়িটিতে এলইডি বাল্ব সংযোজন করতে পারলে দিনের বেলাতেও দূর থেকে ঘড়িটির সময় দেখা যাবে।
মিঠু আরও জানান, আমার ঘড়িটি রাতের বেলা অনেক দূর থেকে দেখা যাবে। কিন্তু ঘড়িটিতো অনেক উঁচুতে রাখতে হবে। তবেই না দেখা যাবে। আমার বাবার তো আর এতো বড় বাড়ি নেই যে, তার ওপর রাখবো।
এ ব্যাপারে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিজাম উল আজীম নিউজবাংলাদেশকে জানান, মিঠুর এ রকম একটি কাজে আমরা অনেক খুশি। এতো বড় ঘড়ি তোলার মতো জায়গা যদি মিঠুর না থাকে আমাদের আছে। মিঠু যদি আমাদের বলে, তবে আমরা রাজশাহী নগরীর সবচেয়ে উঁচু জায়গায় তার ঘড়িটি রাখার ব্যবস্থা করবো।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








