জোয়ারে খুলনার তিন উপজেলা প্লাবিত
খুলনা: খুলনার তিন উপজেলায় নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ভেঙে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। প্লাবিত হয়েছে তিন উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম।
ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো হলো- কয়রা উপজেলার শাঁকবাড়িয়া নদীর ১৪/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ, রূপসা নদীর সিংহেরচর বাঁধ ও ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা নদীর চাঁদগড় এলাকার বাঁধ।
জানা গেছে, কয়রা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ পোল্ডারের শাঁকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে হরিহরপুর, পদ্মপুকুর, গাতিরঘেরি, চরামুখা ও পাতাখালি গ্রাম লোনাপানিতে প্লাবিত হয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২৯ আগস্ট বিকেল ৫টার সময় হঠাৎ হরিহরপুর সাইক্লোন শেল্টারের পেছনের বেড়িবাঁধের একশো ফুট ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরদার মতিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। পাউবোর সেকশন অফিসার মো. আব্দুল মতিন খবর পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আখম তমিজ উদ্দিন নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামতের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।”
শনিবার সন্ধ্যায় শরাফপুর ইউনিয়নের চাঁদগড় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিকল্প বাঁধ ভেঙে ১৩টি গ্রাম ফের প্লাবিত হয়। ডুমুরিয়া উপজেলার ২৯ নম্বর পোল্ডারে শরাফপুর ইউনিয়নের চাঁদগড় গ্রাম এলাকায় ২৫ জুলাই ভদ্রা নদীর প্রবল জোয়ারের স্রোতে ৪০০ মিটার জুড়ে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়।
এরপর গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ২৫ দিন পর বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবারও নির্মাণকৃত বিকল্প বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার ভেঙে ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ওই এলাকার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় বেড়িবাঁধের ওপর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ সামছুদ্দৌজা নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “ভাঙন রোধে উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে চাহিদামতো নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এলাকাগুলোর ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় আড়াইশ’ শ্রমিকসহ গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। এজন্য বাঁশ-পেরেক দিচ্ছে উপজেলা পরিষদ।”
তিনি আরো বলেন, “এছাড়া আশ্রয়হীন মানুষের জন্য থাকার ব্যবস্থা, ত্রাণ সমগ্রী ও চিকিৎসা সেবাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।”
শনিবার বিকেলে রূপসা উপজেলার রূপসা নদীর জোয়ারের পানির প্রবল তোড়ে সিংহেরচর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে কমপক্ষে দশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া তালুকদার ডকের ওপর দিয়েও জোয়ারের পানি ঢোকায় আইচগাতি, চরমোছাব্বাতপুর ও শ্রীফলতলাসহ কমপক্ষে দশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদেকুর রহমান নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “জোয়ারের পানির তোড়ে বেশ কিছু এলাকায় তলিয়ে গেছে। কয়েকটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে বলে জানতে পেরেছি। তবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর এখনও শুনিনি। সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যানদের খোঁজ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম








