চুয়াডাঙ্গায় সাপ আতঙ্ক: ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৪৫
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামবাসীর মাঝে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি সাপের কামড়ে সিজার নামে একজন মারা গেছে। এ পর্যন্ত সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৪৫ জন।
গ্রামবাসী জানান, এ যাবত প্রায় ৪৫ জনকে সাপে কামড়িয়েছে। এদের মধ্যে সিজার নামের নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্র মারা গেছে। গ্রামের শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। মাঠে-ঘাটে সবখানে সাপের ভীতি। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে গ্রামবাসী। আর এই সুযোগে কবিরাজদের ব্যবসা রমরমা। সাপে কাটা রোগী দেখতে গ্রামটিতে ভিড় করছেন কবিরাজরা, হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা-পয়সা। সাপের কামড়ে একমাত্র সন্তান সিজারকে হারিয়ে জীবননগর উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের ফারুকের স্ত্রীর আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে মুর্ছা যাচ্ছেন তিনি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সময় চুয়াডাঙ্গা সদরসহ জেলার কোনো হাসপাতালেই সাপে কাটা রোগীর ভ্যাকসিন নেই।
শুক্রবার সরেজমিনে ডুমুরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কবিরাজ বলাইসহ ৬ থেকে ৭ জন সাপেকাটা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কথা হয় কবিরাজ বলাইয়ের সঙ্গে। কবিরাজ বলাই জানান, একমাত্র কবিরাজরাই পারে সাপে কাটা রোগী ভালো করতে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতার কারণে আমরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়েই কবিরাজের শরণাপন্ন হচ্ছি। স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি জানার পরও তাদের কোনো টিম গ্রামে পাঠায়নি। তাই কবিরাজই গ্রামবাসীদের একমাত্র ভরসা।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতার প্রমাণও পাওয়া যায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে।
শুক্রবার দুপুরে তিনি জানান, কোন গ্রামে না কি সাপের উপদ্রব বেড়েছে এবং একজন মারাও গেছে বলে শুনিছে। তবে গ্রামের নামটা জানি না। ডুমুরিয়া গ্রামের কথা বলার পর তিনি জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফোন করে একজন চিকিৎসকের কাছে বিষয়টি জানতে চান।
ফোন রেখে তিনি জানান, সেখানকার একজন কর্তব্যরত চিকিৎসক জানালেন, গ্রামে একজনকে সাপে কামড়ানোর পর থেকে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ সাপ দেখতে পাচ্ছে না।
ওই চিকিৎসক জানান, গ্রামবাসীর অভিযোগ জ্বীন সাপে গ্রামবাসীদের কামড়াচ্ছে। সিভিল সার্জনের কাছে গ্রামবাসী এই সময়ে একটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানালেও সিভিল সার্জন তা নাকচ করেন দেন।
তিনি জানান, সামান্য সাপের উপদ্রবের জন্য গ্রামে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা আদৌ সম্ভব নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মুহূর্তে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ জেলার কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের ভ্যাকসিন মজুত নেই। ভ্যাকসিন না থাকায় এ সময় কোনো রোগী হাসপাতালে এলে মৃত্যু হতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








