বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব সহকারী থেকে কোটিপতি!
বান্দরবান: নিম্নমান হিসাব সহকারী থেকে কোটিপতি হয়ে উঠেছেন বান্দরবান জেলা বিদ্যুৎ অফিসের শামসুল হক (শামসু)। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিউজবাংলাদেশকে জানান, সরকারি বিধান অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকতে পারেন না। কিন্তু মো. শামসুল হক (শামসু) টানা ২৫-৩০ বছর একই কর্মস্থলে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে বদলি করতে চাইলেও মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে তা তিনি ঠেকিয়ে রাখেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরি জীবনের স্বল্প বেতনে কীভাবে তিনি গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি? তারা জানান, বালাঘাটায় পুলিশ লাইনের পাশে দুটি, শহরের লাঙ্গিপাড়ায় একটি, ক্যাচিংঘাটার নতুন পাড়ায় একটিসহ সদরের বিভিন্ন স্থানে শামসুর একাধিক জমি রয়েছে। এসব জমির আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
তারা আরো জানান, বর্তমানে শামসু বালাঘাটায় একটি জমিতে কোটি টাকা ব্যয়ে বিলাসবহুল অট্টালিকা নির্মাণ করছেন। অনেকের ধারণা, স্থায়ী সম্পত্তি ছাড়া ব্যাংকেও তার কয়েক কোটি টাকা রয়েছে। এ কারণে গড়তে পারছেন বিলাসবহুল এ অট্টালিকা।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, সরকারি চাকরীজীবীদের ৫০ হাজার টাকার অধিক মূল্যের সম্পত্তি কেনার আগে সরকারের অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকলেও তিনি এ নীতির কোনো তোয়াক্কা করেননি।
বিদ্যুৎ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “শামসুই একমাত্র বান্দরবানে মিটার বাণিজ্য করেন। নির্ধারিত সরকারি ফি না নিয়ে তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে মিটার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন ১৫-২০ হাজার টাকা। আর এর ফলে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
এ কর্মচারী আরো বলেন, “শুধু তাই নয়, অফিসের অজান্তে নানাভাবে তিনি অফিস সম্পত্তির অপব্যবহার করছেন। আর এভাবেই তিনি গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি। যা এখনো পর্যন্ত অনেক বড় বড় কর্মকর্তা ভালো বেতন পাওয়ার পরও করতে পারেননি।”
বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগের নিম্নমান হিসাব সহকারী মো. শামসুল হক (শামসু) মোবাইলে নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “শুধু এসব এলাকাতেই আমার জায়গা না, বান্দরবানের সব এলাকাতেই আমার জায়গা আছে। জেলার বিদ্যুৎ বিভাগের অনেকেই আমার এসব সম্পত্তির কথা জানে। সংবাদ প্রকাশ করলে আমার কিছুই হবে না।”
বিদ্যুৎ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সাহা নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “মিটারের জন্য ২৯শ’ টাকার বেশি নেওয়ার কথা নয়। হয়তো দু’চারশো টাকা খরচের জন্য নিতে পারে। এর বেশি টাকা যদি নেওয়া হয় তবে আমি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”
বদলির ব্যাপারে তিনি বলেন, “বদলি হচ্ছে শুধু কর্মকর্তাদের জন্য। সরকার আমাদেরকেই বদলি করে। কর্মচারীদের বদলি করলে তারা যায়ও না, যেতেও চায় না। তার এতসব সম্পত্তি কোথা থেকে আসছে তা প্রশ্নবোধক। তার দুর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগ পেলে অবশ্যই অফিসিয়ালি ব্যবস্থা নেব। কারণ এগুলোর সাথে আমাদের অফিসের সুনাম জড়িত।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম








