সীতাকুন্ডে সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ: দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
সীতাকুন্ড: চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে দ্বিতীয় দিনের বন্ধ রয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষ। গ্রাম-অঞ্চলের একমাত্র ভরসা ছিল সিএনজি অটোরিকশা। কিন্তু সিএনজি অটোরিকশা না পাওয়াতে ৫-৮ কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটে হেঁটে সীতাকুন্ড আসতে দেখা গেছে অনেককেই। কেউ কেউ আবার বিকল্প ব্যবস্থাতে গন্তব্যস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করছে। সীতাকুন্ডের মিরেরহাট এলাকায় পিকআপ ভ্যানে করে যাত্রী আনা-নেওয়া করতে দেখা গেছে।
কলেজ পড়ুয়া আর্জিনা আক্তার মুন্নি নিউজবাংলাদেশকে বলেন, কলেজে যাওয়ার জন্য অনেক সময় ধরে গ্রামের সিএনজি স্টেশনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সিএনজি না পাওয়ায় পরে হেঁটে হেঁটে আসতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর ততক্ষণে কলেজের সময়ও পার হয়ে যায়। এখন আবার দেড় ঘণ্টা লাগবে বাড়িতে যেতে। কোনো লোকাল সার্ভিস না থাকায় আবারও হেঁটে হেঁটে বাড়িতে যেতে হবে। ওই কলেজ ছাত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, এভাবে আর কতদিন চলবে?
চাকরিজীবী মো. হান্নান বলেন, ভাই, আমি চট্টগ্রামে ছোটখাট একটা চাকরি করি। প্রতিদিন সীতাকুন্ড-চট্টগ্রাম আসা যাওয়া করেই চাকরি চালিয়ে যাচ্ছি। সকালে ফাস্টটাইমে এসে ট্রেনে করে চট্টগ্রামে যাই। কিন্তু আজ সিএনজি-অটোরিকশা না থাকায় ঘর থেকে একটু তাড়াতাড়ি বের হয়েও ট্রেন মিস করলাম। এখন বাসে করে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে। তাতে আজ চাকরিতে গিয়েও কোনো লাভ হবে না। তার প্রশ্ন, সিএনজি বন্ধ করে দিলে সাধারণ মানুষ, আমাদের কী হবে?
এদিকে সীতাকুন্ড থানার বেশিরভাগ মানুষ সীতাকুন্ডমুখী হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ করাতে বাজারে কাঁচাবাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতেও পারছে না। এতে করে সাধারণ মানুষও চরম দুর্ভোগে পড়েছে। যারা সীতাকুন্ড বাজারে বিকল্প ব্যবস্থা দিয়ে কোনোভাবে যাচ্ছেন কিন্তু তাদের ফেরার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। চরম ভোগান্তি হচ্ছে তাদের।
সিএনজি চালক মুখলেছুর রহমান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ভাই, আমি কিস্তিতে টাকা নিয়ে গাড়ি নিয়েছিলাম। প্রতি সপ্তাহে আড়াই হাজার টাকা কিস্তি। আমাদের যদি গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এ টাকা কে দিবে। কিস্তির টাকা কি সরকার দিবে? আমাদের বউ-বাচ্চারে খাওয়াবে কে?
সিএনজি চালক করিম উদ্দিন বলেন, সিএনজি যদি মহাসড়কে না চলে তাহলে কোথায় চলবে? শুধু গ্রামে সিএনজি চালিয়ে তো মালিকদের ইনকামও দিতে পারব না, নিজের বেতন তো দূরের কথা। আমরা সীতাকুন্ড সকল সিএনজি চালকরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
অন্যদিকে ১ আগস্ট থেকে সিএনজি বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কের পৌরসদর এলাকায় বভিন্ন ধরনের পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন করে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








