News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১৮ মে ২০১৫
আপডেট: ১২:০৬, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

মসনদে মোদির বছর পার, কে খবর রাখে আর অযোধ্যার!

মসনদে মোদির বছর পার, কে খবর রাখে আর অযোধ্যার!

এই সেই অযোধ্যা যেখানে একটি মন্দির বানানোর আন্দোলন-সংগ্রামে আর উন্মাদনায় ভারত নামক বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশটির ক্ষমতার তখত-তাউস ওলট-পালট হয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িকতা-অসাম্প্রদায়িকতার স্ক্রিন আর মেমোরিতে অনেক হিসেবের খাতাই নতুন করে লিখতে হয়েছে। অথচ এই অযোধ্যার কথিত বা তথাকথিত পবিত্র স্থানের পাশেই জলাধারে বইছে ময়লা কালো পানি। তাতে ভাসছে খয়েরি-হলদেটে আবর্জনা আর চারদিকে বমি ধরানো দুর্গন্ধ। নাকে হাত না দিয়ে সেখানে দাঁড়ানো দায়। তবে বিজেপি নেতা মোদি কিন্তু দিল্লির ক্ষমতায়। তারও এক বছর পূর্তি হয়ে গেল গত ১৫ মে। ২০১৪ সালের ১৬ মে`র পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতীয় রাজনীতিতে অনেক কিছুই ঘটে গেছে। তবে অযোধ্যা রয়ে গেছে সেই আগের অন্ধকারেই।

এই অযোধ্যা নিয়ে রাজনীতির কোপে ধ্বংস হয়েছে শত শত বছরের পুরনো বাবরি মসজিদ, একসময়ের সামান্য একজন চা দোকানি চলে এসেছেন দিল্লির মসনদে। কিন্তু সেই অযোধ্যার পরিবেশ-পরিস্থিতি উন্নয়নে তাদের বা অন্য কারোই কোনও বিকার নেই।

মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের প্রথম বছর পূর্তি লগ্নে অযোধ্যায় রামের জন্মভূমি এলাকার ওপর এক সরেজমিন প্রতিবেদন করেছে হিন্দি দৈনিক নবভারত টাইমস। পত্রিকাটি বলছে, সেখানকার অবস্থা এমনই যে এখনই সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নিলে একসময় এর ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।

পত্রিকাটির মতে, নোংরা আবর্জনায় ঘৃণা উদ্রেককারী ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে অযোধ্যায়। ছবির এই সিঁড়িটাকে বলা হয়ে থাকে- ভগবান রামের সিঁড়ি। এটা সম্ভবত হরিদ্বারের ঘাটের মতো করে বানানো হয়েছে। অযোধ্যায় বহমান সরযুর পাশের মন্দির থেকে নেমে আসা এই সিঁড়ির ধাপগুলো আসলে বছরের পর বছর আবদ্ধ পচা পানির এক পুকুরকে ধরে রেখেছে যেন। ওই পুঁতিগন্ধময় পানিতে কোনও পশুও গিয়ে মুখ দিতে চায় না।

বিতর্কিত জায়গায় মন্দির বানানো যায়নি, ঠিক আছে। কিন্তু সেই স্থানটাকে সংস্কার করতে, সাজিয়ে-গুছিয়ে দর্শনীয় করতে বাধা তো দেয়নি কেউ! বিবাদের বিষয় হচ্ছে- বিতর্কিত ওই স্থানটায় মন্দির না মসজিদ, কোনটি ছিল!

কিন্তু অযোধ্যা-ফৈজাবাদের উন্নতির বিরুদ্ধে তো কংগ্রেস-বিজেপি বা অন্য দলগুলোর কারওই বিরোধ নেই। এই এলাকার উন্নয়নে সুপ্রিম কোর্টেরও কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, নেই হিন্দু-মুসলিম কোনো সম্প্রদায়েরও বিরোধ।
বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে অযোধ্যার উন্নয়নের অঙ্গীকার ছিল। ওই সময় দলের জেষ্ঠ্য নেতা মুরলি মনোহর যোশি বলেছিলেন, এর উন্নয়ন আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য জরুরি।

কিন্তু সেই কথা যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়ে বেঁচেছে। রামমন্দির নির্মাণের উন্মাদনায় যে অযোধ্যা নিয়ে এত কাণ্ড তা দিনদিন শ্রীহীন পুঁতিগন্ধময় পরিবেশের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। তবে এটা দিয়ে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গেছে অন্তত, তা হলো- নেতাদের কথায় বিশ্বাস রাখা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারণ, উদ্দেশ্য হাসিলে তারা এত বেপরোয়া যে, লাখো কোটি মানুষের বিশ্বাসের আধার পবিত্র ধর্ম নিয়েও খেলায় মেতে উঠতে তাদের একটুও বাঁধে না।

নিউজবাংলাদেশ.কম/একে

 

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়