আমার কথা বাদ দিলাম। অন্য কোনও মহিলা, যে মহিলা স্বামীর জন্য সেক্রিফাইস করে নাই, পুলাপানের কথা ভাইবা নিজের সাধ আহ্লাদ বিসর্জন দেয় নাই, হুমায়ুনের বউয়ের মতো বুড়া বয়সে বিয়া একবার সে করতে চাক না--- গাইল্যাইয়া তার গোষ্ঠী উদ্ধার করবো মানুষ।
আমার কথা বাদ দিলাম। অন্য কোনও মহিলা, যে মহিলা স্বামীর জন্য সেক্রিফাইস করে নাই, পুলাপানের কথা ভাইবা নিজের সাধ আহ্লাদ বিসর্জন দেয় নাই, হুমায়ুনের বউয়ের মতো বুড়া বয়সে বিয়া একবার সে করতে চাক না--- গাইল্যাইয়া তার গোষ্ঠী উদ্ধার করবো মানুষ।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিনের দিনে (বুধবার) বিয়ের খবর জানিয়ে আলোচনায় এসেছেন তার সাবেক স্ত্রী কবি গুলতেকিন খান।
৫৬ বছর বয়সী গুলতেকিন বিয়ে করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কবি আফতাব আহমেদকে।
তাদের বিয়ের খবরটি প্রকাশ্যে আসে ১৩ নভেম্বর বুধবার রাতে। সম্প্রতি পারিবারিকভাবেই এ বিয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছে গুলতেকিনের পরিবার।
গুলতেকিনের এ বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ তাদের এ বিয়ে নিয়ে সমালোচনা করলেও বেশিরভাগই এ দম্পতিকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছেন।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুলতেকিন-আফতাবের বিয়ে নিয়ে শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল:
‘ফেসবুক হুমায়ুনে টইটম্বুর। হুমায়ুনের বউ বুড়া বয়সে বিয়া করছে, তাতেও হাত্তালির সীমা নাই। আমার বয়সও তার মতই, কিন্তু আমি যদি এখন বিয়া করছি ঘোষণা দেই, আমার চামড়া ছিইল্ল্যা মাইনষে লবণ লাগাইবো,আর আমারে জ্যান্ত কব্বর দিবো, ফেসবুক ভাসাইয়া ফেলবো খাপসা গালি দিয়া, আমারে কুত্তা দিয়া কী করবো কইয়া আর আমার ইনবক্স গান্ধা বানাইবো তাগোর ইয়ের ছবি পাঠাইয়া। হুমায়ুন তার বউরে তালাক দিয়া কচি একটা ছেড়িরে বিয়া কইরা দূরে চইলা গেসে, আমোদে আহ্লাদে রাজার জীবন যাপন করছে, খরচপাতি দেয় নাই, বউ এক্লা এক্লা পুলাপান মানুষ করছে, -- এই কারণে বউয়ের লাইগ্যা মাইনষের করুণা জন্ম নিসে। এত সেক্রিফাইস যে করছে স্বামীর জন্য, স্বামী মইরা যাওয়ার পর, পুলাপান মানুষ হইয়া যাওয়ার পর না হয় তার একটু সাধ আহ্লাদ মিটাক। অভিনন্দন ওই করুণা থেইকাই আসতাসে।
আমার কথা বাদ দিলাম। অন্য কোনও মহিলা, যে মহিলা স্বামীর জন্য সেক্রিফাইস করে নাই, পুলাপানের কথা ভাইবা নিজের সাধ আহ্লাদ বিসর্জন দেয় নাই, হুমায়ুনের বউয়ের মতো বুড়া বয়সে বিয়া একবার সে করতে চাক না--- গাইল্যাইয়া তার গোষ্ঠী উদ্ধার করবো মানুষ।
এক মহিলার বুড়া বয়সের বিয়া মাইনা নিসে সমাজ। তার মানে কিন্তু মেয়ে- মহিলারা যা ইচ্ছা তাই করনের সুযোগ পাইয়া গেসে তা না। পাইয়া গেসে ভাইব্যা সুখ পাওয়ার কিছু নাই।
বিয়া করাডার নাম নারী স্বাধীনতা না। বরং উল্ডা। বিয়া না কইরা, ত্যাগ না কইরা, মাইনষের করুণার পাত্রী না হইয়া, পরনির্ভর না হইয়া, মাথা উচা কইরা বাচার নাম নারী স্বাধীনতা। ভুইলা গেলে চলবে না বিয়া জিনিস্টাই নারী বিরোধী।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকাতেই ছোট পরিসরে গুলতেকিনের বাসায় তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। অতিরিক্ত সচিব আফতাব আহমদের কবি এবং লেখক হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। আফতাব আহমদের সঙ্গে গুলতেকিনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। বিয়ের পর গুলতেকিন আমেরিকায় চলে গেছেন। দুই সপ্তাহ পর ফিরে বন্ধু-বান্ধব সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করবেন বলে জানা গেছে।
১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদকে কিশোরী গুলতেকিন প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন।
হুমায়ূন আহমেদ ২০০৩ সালে মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে ভালোবেসে পাতা হুমায়ূন-গুলতেকিন সংসারে বিচ্ছেদ ঘটে। ২০০৫ এ শাওনকে হুমায়ূন বিয়ে করলেও গুলতেকিন আর বিয়ে করেননি। একেবারে আড়ালে চলে যান তিনি।
সন্তানদের আঁকড়ে নীরবে-নিভৃতে জীবন কাটিয়েছেন তিনি। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর সাত বছর পর অবশেষে গত অক্টোবরের শেষের দিকে আফতাব আহমেদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার ব্যারিস্টার স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটে ১০ বছর আগে। তাদের একমাত্র সন্তান লন্ডনে লেখাপড়া করছেন।