যশোরের বেনাপোল কাস্টমসে দীর্ঘ দিন যাবত ধুকছে জনবল সংকটে। এসংকট সমাধানের লক্ষ্যে ১৩ বিভাগে ৯৪ জন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করে দীর্ঘ তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কোন খোঁজ নেই পরিক্ষার।
যশোরের বেনাপোল কাস্টমসে দীর্ঘ দিন যাবত ধুকছে জনবল সংকটে। এসংকট সমাধানের লক্ষ্যে ১৩ বিভাগে ৯৪ জন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করে দীর্ঘ তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কোন খোঁজ নেই পরিক্ষার।
যশোরের বেনাপোল কাস্টমসে দীর্ঘ দিন যাবত ধুকছ জনবল সংকটে। এসংকট সমাধানের লক্ষ্যে ১৩ বিভাগে ৯৪ জন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করে দীর্ঘ তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কোন খোঁজ নেই পরিক্ষার।
জানা যায়, ২ অক্টবর ২০১৬ সালে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার নথি নম্বার ২য়/৫(১৩)২-জন-প্র./লোকবল/নিয়োগ/বেনা/৪(অংশ-২)/২০১৬/৬১৭৬ অর্থ মন্ত্রণালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পাদ বিভাগ পত্র সংখ্যা-০৮.০০.০০০০.০৩৮.১১.০৫৪.১২ (অংশ).৫১২,তারিখ ২১শে জুলাই ২০১৬। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় সীমা বেধে দেওয়া হয়েছিল ১৫ই নভেম্বর ২০১৬।
এর মধ্যে কম্পিউটার অপারেটর পদে ৪টি, সাঁট-লিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ২টি , উ”চমানসহকারী পদে ৬টি,ক্যাশিয়ার পদে ১টি, সাঁট-লিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ২ টি, অফিসসহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ৫ টি, গাড়ি চালক ১০টি,টেলিফোন অপারেটর পদে ১টি, সিপাহী পদে ৫৬টি, ফটোকপি অপারেটর পদে ২টি,ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে ১টি, অফিস সহায়ক পদে ৩টি, নিরাপত্তা প্রহরী পদে ১টিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করেন।
লক্ষ্য কোটি বেকারের দেশে চাকুরী নামের সোনার হরিণটি ধরতে এ বিজ্ঞাপন দেখে লক্ষাধিক চাকুরী প্রত্যাশীরা আবেদনও করেন। আর এ চাকুরী প্রত্যাশিদের নিকট থেকে ব্যাংক ড্রাফট বাবদ আদায় করা হয় প্রায় কোটি টাকা। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে চরম উদাসীন।
কাস্টমস সুত্রগুলো বরাবরের মত বলছে আবেদনকারীদের আবেদন যাচাই-বাছাই চলছে। তবে কবে নাগাদ এ বিপুল সংখ্যক চাকুরী প্রত্যাশীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে সে বিষয়ে জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস সুত্র থেকে জানা যায়, বিজ্ঞপ্তী প্রকাশের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে ১৩টি পদে ৯৪ জনের বিপরীতে ৬৪ হাজার ২টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে কম্পিউটার অপারেটর পদে ১ হাজার ৩শ’ ৭৬টি, সাঁট-লিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ৮শ’৭টি, উ”চমানসহকারী পদে ১৮ হাজার ৬শ’ ১০ টি,ক্যাশিয়ার পদে ৪শ’ ১৯টি, সাঁট-লিপিকার-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ১শ’ ৯১টি, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার পদে ৫ হাজার ৩শ’ ৩২টি, গাড়ি চালক পদে ৯শ’৭টি,টেলিফোন অপারেটর পদে ৪৮টি, সিপাহী ৩১ হাজার ৬শ’ ৪৮ টি, ফটোকপি অপারেটর ২শ’ ১০ টি,ইলেক্ট্রেশিয়ান পদে ৭৬টি, অফিস সহায়ক পদে ২ হাজার ৩৯ টি,নিরাপত্তা প্রহরী পদে ১শ’৪১টি, পদের নাম নেই এমন আবেদনের সংখ্যা জমা পড়েছে ২ হাজার ১শ’ ৯৮টি।
তবে বিশেষ একটি সুত্র বলছে প্রকৃত আবেদন পত্র জমা পড়েছে আরো বেশি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরেও দীর্ঘ দিন পরীক্ষা না হওয়ায় বেনাপোলের সাবেক কাস্টমস কমিশনার শওকত হোসেন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হওয়ার কারণে দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত কমিশনার জাকির আহম্মেদ, ডেপুটি কমিশনার শাকিলা পারভীন, ডেপুটি কমিশনার রাফেয়া সুলতানা, ডেপুটি কমিশনার সাইদ আহম্মেদ রুবেল, সহকারী কমিশনার নুরুল আমিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন।
তার পর থেকে এসব কর্মকর্তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একটু নড়ে চড়ে বসেছিলেন। তবে কিছু দিনের মধ্যে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা শওকত হোসেন বদলী হওয়াতে নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম থমকে যায়।
কাস্টমসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শামিম, রহিম, মামুন, জাকারিয়া,মাহাবুব রহমানসহ একাধিক আবেদনকারী জানান, আমরা লেখাপড়া শেষ করেছি চার বছর হলো। সরকারের বেধে দেওয়া চাকুরীর বয়সও প্রায় শেষ হতে চলেছে। বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করতে আমাদের প্রচুর টাকা পয়সা লাগেছে। প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ১শ’ থেকে ২শ’ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক ড্রাফট করেছি । ছবিসহ কাগজপত্র প্রস্তুত করতে ও প্রতিটি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যাতায়াত বাবদ প্রায় দু’ থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করেছি।
অনেক আশা নিয়ে বেনাপোল কাস্টমসে নিয়োগ দিলে আবেদন করি তিন বছর আগে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পরীক্ষার কোন হদিস নেই। যদি যথাসময়ে চাকুরীর পরীক্ষাগুলো নাই হয়,তাহলে আমাদের লেখা-পড়া শিখে লাভটা কি? আবার অনেকের এভাবে আবেদন করতে করতে চাকুরীর বয়সও শেষ হয়ে গেছে। তাই তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার জন্যও বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মাদ বেলাল হোসেন চৌধুরীর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিউজাবাংলাদেশকে বলেন, “আমি এখানে নতুন এসেছি। আগে এখানে কি হয়েছে সেটি আমার জানা নেই। তবে এ খাতে সরকারের বাজেট কম থাকায় কাস্টমসের নিয়োগ পরীক্ষাগুলে বন্ধ রয়েছে।”
“আমি পরীক্ষার যাচাই-বাছায় কমিটিকে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে আবেদনপত্রগুলো দ্রুতগতিতে যাচাই-বাছাই করার জন্য। ইতোমধ্যে আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়ে গেছে। উপর থেকে নির্দেশনা পেলেই শিগ্রই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আবেদনকারীদের পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করা হব ”